সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিউমার

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, টিউমার হচ্ছে— কিছু অস্বাভাবিক টিস্যুর সমাবেশ, যেখানে কোষগুলো অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সংখ্যা বাড়ায়। টিস্যু মানেমানবদেহে বিলিয়ন নয়, ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কোষ আছে। ধরা হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্কের দেহে গড়ে ৩০ ট্রিলিয়নের মতো কোষ থাকে। কোষের ভেতর কিছু নিয়মে পুরনো কোষ মরে যায়, নতুন কোষ জন্ম নেয়, আবার কিছু কোষ আকারে বাড়ে, কিছু কোষ সংখ্যায় বাড়ে। কিন্তু কোন কোষ মরে যাবে এবং কোন কোষ কতগুলো নতুন কোষ জন্ম দিতে পারবে, কোন কোষের আকার কেমন হবে— কোষের এমন সব বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কোষের ভেতর কিছু নির্দেশ বা নিয়ম থাকে। আর সে নিয়মগুলো থাকে ডিএনএতে।

কোনো কারণে ডিএনএর মধ্যে থাকা এ নির্দেশ প্রক্রিয়া পরিবর্তন হয়ে গেলে কোষগুলো তখন অস্বাভাবিকভাবে নতুন কোষের জন্ম দিতে থাকে, পুরনো কোষ মরে না গিয়ে হযবরল ঘুরতে থাকে, অথবা নতুন জন্ম নেওয়া কোষগুলো কাজবিহীন ঘুরে বেড়ায়। কারণ কোষগুলোতে কোথায় গিয়ে থামতে হবে তার নির্দেশ থাকে না, কী কাজ করবে তার নির্দেশটি পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন পরিবর্তিত ডিএনএর নির্দেশে রোবটের মতো একের পর এক নতুন কোষের জন্ম দিতে থাকে, নতুন অস্বাভাবিক কোষের সংখ্যা বেড়ে বেড়ে স্বাভাবিক কোষের কাজে ব্যাঘাত ঘটায়, বুড়ো কোষগুলোর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া থেমে গিয়ে আবর্জনার মতো জমা হতে থাকে শরীরে।

তখন শরীরের অতিরিক্ত এবং অস্বাভাবিক এ কোষগুলো কোথাও জমা হয়ে একটি লাম্প বা প্লি বা চাকতির মতো হয়ে প্রকাশ পেলে তাকে তখন টিউমার বলে।

এ টিউমার দুই ধরনের হয়। এক ধরনের টিউমার শুধু এক জায়গাতে বৃদ্ধি পেয়ে এক জায়গাতেই বসে থাকে। এদের বলে বিনাইন টিউমার। এরা তেমন ক্ষতিকারক নয়।

আরেক প্রকার টিউমারের ভেতর থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলো রক্ত কিংবা লিম্ফ্ নামক কিছু রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে শরীরের অন্য কোনো অংশে গিয়ে জমা হয়ে সেই অংশের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটায়, নতুন কোনো টিউমার তৈরি করে সেখানে, তখন তাদের বলে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার।

এ ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকে অন্যভাবে বলে ক্যানসারাস টিউমার। সংক্ষেপে ক্যানসার বলে।

টিউমারের মধ্যে থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলো শরীরের বিভিন্ন অংশে গিয়ে কখনও নতুন টিউমার হতে পারে, কখনও কেবল সেখানকার অন্য কোষগুলোর কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এমন করে না ছড়িয়ে পড়া বিনাইন টিউমারগুলো যখন শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়ে গিয়ে সমস্যা তৈরি করে, সেই ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলোই মূলত বেশিরভাগ ক্যানসারের জন্য দায়ী বলে, তখন তার তৈরি করা সমস্যাগুলোকে সহজ করে কেবল ক্যানসার বলে। এ ক্ষেত্রে যে অঙ্গ বা অংশ থেকে কোষের পরিবর্তনের শুরু, তখন তাকে ওই পার্টের ক্যানসার বলে।

একই ধরনের কিছু কোষ, যখন কোথাও এক হয়ে একই ধরনের কাজ করে। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ব্রেস্ট ফিডিং

  গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পর মায়ের বকে প্রচুর দুধ সঞ্চিত হয়। শিশুর জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে সম্পুর্ণ চাহিদা মেটানোর জন্য মায়ের দুধই উৎকৃষ্ট। মায়ের দুধের উপাদানের মধ্যে কলোস্ট্রাম বা শাল দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শালদধ গর্ভাবস্থায় স্তনে সঞ্চিত হতে থাকে এবং প্রসবের পর তিন চার দিন পর্যন্ত মায়ের স্তন থেকে নিসৃত হয়। এই দুধ অত্যান্ত ঘন , আঠালো এবং হলুদ ধরনের হয়। এতে আমিষের পরিমান বেশী এবং স্নেহজাতীয় পদার্থ কম থাকায় নবজাতকের জন্য তা সহজপাচ্য। এই শাল দুধে প্রচুর পরিমাণ রোগ প্রতিরোধক পদার্থ বা এন্টিবডি থাকায় শিশু বিভিন্ন রোগের ( পোলিও , ইনফ্লুয়েঞ্জা অন্যান্য ভাইরাস আক্রমন , ডায়রিয়া ) আক্রমন থেকে রক্ষা পেয়ে থাকে। এই দুধ শিশুর অন্ত্রে ল্যাকটোব্যাসিলাস বিফিডাস নামের এক ধরনের সাহায্যকারী জীবানুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে   যা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন প্রতিরোধ করে থাকে এবং পরবর্তীকালে শিশুকে আমাশয় বা আন্ত্রিক ভাইরাস রোগ থেকে রক্ষা করে। - জননী স্বীয় সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর

দন্ত রোগসমূহ

  Ø      দন্ত রোগসমূহ দন্তক্ষয়: দন্তক্ষয় বা কেরিজ একটি জীবানু জনিত রোগ। যে ধরনের জীবানু এই রোগের সৃষ্টি করে তার মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কাস ও ল্যাকটোবেসিলাস নামক জীবাণুই প্রধান। দাঁতের গায়ে জমে থাকা খাদ্যদ্রব্যের উপর অম্ল প্রস্তুতকারী জীবানু স্থানীয়ভাবে অম্ল সৃষ্টি করে যা দাঁতের ক্ষয়সাধন করে এবং দাঁতের গায়ে গর্তের সৃষ্টি করে। এটাই দন্তক্ষয় রোগ বা কেরিজ। জীবানু প্রলেপ, ডেন্টাল প্লাগ বা ব্যাকটেরিয়াল প্লাগ মুখে সাধারণত: বিভিন্ন ধরনের জীবাণু অবস্থান করে। আহারের পরে মুখ ও দাঁত ভালভাবে পরিষ্কার না করলে ঐ সব জীবানু দাঁতে লেগে থাকা খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে এবং এইভাবে লক্ষ লক্ষ জীবাণু জমে উঠে। এই ধরনের জীবাণু স্তরকে ব্যাকটেরিয়াল প্লাগ বলে। সহজ কথায় ভোরবেলায় যে আঠাল সাদা বস্তু মুখের মধ্যে পাওয়া যায, এটাই জীবাণু প্রলেপ। পরীক্ষা করলে দেখা যায় প্রতি মিলিগ্রাম জীবানু প্রলেপে ৪০ কোটিরও অধিক জীবাণু অবস্থান করে। খাদ্যকনা ভালভাবে কুলকুচা করলে ধুয়ে যাবে, কিন্তু ডেন্টাল প্লাগ জীবানু প্রলেপ আঠালো বলে কেবল ব্রাশ ব্যবহার করলেই দূরীভুত হতে পারে। দন্ত শাস্ত্রে দাতের দুইটি প্রধান সমস্যা দন্তক্ষয়

জীবন

জীবন কি ? এই প্রশ্নের উত্তর অদ্যবধি কোন বিজ্ঞানী আজ পর্যন্ত দিতে সক্ষম হননি। অনেকেই নিম্নক্তভাবে সংগা প্রদান করে থাকে - জীবনকে ভাবা যেতে পারে অনেকগুলো জড়ের এমন এ জটিল সমাবেশ হিসেবে , যেখানে ঐ জটিলতার কারনে নতুন কিছু গুনের উদ্ভব ঘটে। যেমন হাইড্রোজেন আর অক্সিজেনের নিদৃষ্ট অনুপাতিক সংযোগে পানি তৈরি হয় , যার বৈশিষ্ট হাইড্রোজেন বা অক্সিজেন কোনটার মতই হয় না। তাই জড়ের সুনিদৃষ্ট সন্নিবেশে জীব গঠিত হলেও তার মধ্যে এমন সব নতুন ধরনের বৈশিষ্টের উদ্ভব ঘটে যা তার জড় গাঠনিক উপাদানের মধ্যে ছিলনা। তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে রূহ সম্পর্কে। আপনি বলেদিন এটা আল্লাহর হুকুম মাত্র। - আল-কুরআন। সূরা আনআম , আয়াত - ২ , ৬০ , ৯০ : তিনিই তোমাদের কাদা - মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন , তার পর একটা সময় নিদৃষ্ট করেছেন .. । তিনিই রাত্রে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিনে তোমরা যা কামাই কর তা তিনি জানেন। তারপর দিনে তোমাদেরকে তিনি আবার জীবিত করেন , যাতে নির্ধারিত সময় পূর্ণ করা হয়। মানব জীবন শুরু হয়