দন্তক্ষয় বা কেরিজ একটি জীবানু জনিত রোগ। যে ধরনের জীবানু এই রোগের সৃষ্টি করে তার মধ্যে স্ট্রেপটোকক্কাস ও ল্যাকটোবেসিলাস নামক জীবাণুই প্রধান। দাঁতের গায়ে জমে থাকা খাদ্যদ্রব্যের উপর অম্ল প্রস্তুতকারী জীবানু স্থানীয়ভাবে অম্ল সৃষ্টি করে যা দাঁতের ক্ষয়সাধন করে এবং দাঁতের গায়ে গর্তের সৃষ্টি করে।
এটাই দন্তক্ষয় রোগ বা কেরিজ। জীবানু প্রলেপ, ডেন্টাল প্লাগ বা ব্যাকটেরিয়াল প্লাগ মুখে সাধারণত: বিভিন্ন ধরনের জীবাণু অবস্থান করে। আহারের পরে মুখ ও দাঁত ভালভাবে পরিষ্কার না করলে ঐ সব জীবানু দাঁতে লেগে থাকা খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে এবং এইভাবে লক্ষ লক্ষ জীবাণু জমে উঠে। এই ধরনের জীবাণু স্তরকে ব্যাকটেরিয়াল প্লাগ বলে। সহজ কথায় ভোরবেলায় যে আঠাল সাদা বস্তু মুখের মধ্যে পাওয়া যায, এটাই জীবাণু প্রলেপ। পরীক্ষা করলে দেখা যায় প্রতি মিলিগ্রাম জীবানু প্রলেপে ৪০ কোটিরও অধিক জীবাণু অবস্থান করে। খাদ্যকনা ভালভাবে কুলকুচা করলে ধুয়ে যাবে, কিন্তু ডেন্টাল প্লাগ জীবানু প্রলেপ আঠালো বলে কেবল ব্রাশ ব্যবহার করলেই দূরীভুত হতে পারে। দন্ত শাস্ত্রে দাতের দুইটি প্রধান সমস্যা দন্তক্ষয় ও মাড়ি সংক্রান্ত রোগ নিয়ে আলোচনা করে। এই দুইটি রোগের সৃষ্টিতেই জীবাণু প্রলেপের ধ্বংসকারী ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ ও দাঁত থেকে এটা দূরে রাখতে পারলে বহু মূল্যবান দাত বেচে যেত এবং বহু মানুষ যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেত।
প্রতিরোধের উপায়:
o নড়া দাঁত থাকলে ফেলে দেওয়া উত্তম।
o খাওয়ার পরে মুখে পানি নিয়ে ভালভাবে কুলকুচা করা উচিত।
o প্রত্যহ খেজুরের ডাল বা নরম টুথব্রাস দ্বারা দাঁত মাজন করা ভাল।
o ডেন্টিষ্ট দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা ভাল।
o লবন মিশ্রিত গরম পানি দ্বারা দিনে ২/৩বার কুলকুচা করবে।
অধিকহারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা বিশেষ করে মুখের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যা করনীয় তা বেশি করে পালন করা। বারবার মিশওয়াক ও কুলি করার অভ্যাস করা, পাঁচ ওয়াক্ত মিশওয়াকসহ অজু করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে মুখের পাইওরিয়া, কেরিজ ও মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন